Monday, December 16, 2019

বঙ্গবন্ধুর বন্ধুর নাম রাজাকারের ১ম তালিকায়


জুমবাংলা ডেস্ক : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন মজিবুল হক নয়া ভাই। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে কলকাতার ইসলামিয়া কলেজে পড়াশোনা করেছেন তিনি। বেকার হোস্টেলে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে থেকেছেন মজিবুল হক। মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ গঠন থেকে শুরু করে ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত পাথরঘাটা সংগঠনের সভাপতি ছিলেন নয়া ভাই। পাথরঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের টানা ৪০ বছর সভাপতি ছিলেন তিনি, ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থাভাজন।
এরপরও সদ্য প্রকাশিত রাজাকারের তালিকায় নাম এসেছে তার। মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় থেকে রোববার (১৫ ডিসেম্বর) ১০ হাজার ৭৮৯ জন রাজাকারে তালিকা প্রকাশ করা হয়। আর এই তালিকায় মুক্তিযোদ্ধা মজিবুল হকের নাম আসায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা।
মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পর পাথরঘাটার প্রত্যন্ত গ্রামে নয়া ভাইয়ের বাড়িতে আশ্রয় ও প্রশিক্ষণ নিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধারা। আশ্রয় নিয়েছেন মুক্তিকামী মানুষও। স্বাধীনতার স্বপক্ষের সংগঠক ও মুক্তিকামী মানুষ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতাকারী মজিবুল হক নয়া ভাইয়ের নাম সদ্য প্রকাশিত রাজাকারের তালিকায় আসায় ক্ষুব্ধ পরিবারের সদস্যরাও। এ বিষয়ে মজিবুল হকের স্ত্রী নুরজাহান বেগম বলেন, বিদায়ের বেলায় দেখতে হলো আমার স্বামীর নাম রাজাকারের তালিকায়, তাও আবার ১ নম্বরে। এখন কবর থেকে তুলে আমার স্বামীর বিচার করতে হবে ?


তিনি বলেন, আমার স্বামী ২০০৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর মারা গেছেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে রাজনীতি করেছেন। সংগ্রাম পরিষদ পরিচালনা করেছেন। যুদ্ধের সময় আমাদের বাড়িতে আশ্রয় নেয়া মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিকামী মানুষের ভরণ-পোষণ দিয়েছেন। আজ সেই মানুষটা কি করে রাজাকার হয়? এর বিচার হবে। এর বিচার করবেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু আমার স্বামীর কাঁধে হাত দিয়ে হাঁটতেন। শেখ হাসিনা আমার স্বামীর পায়ে হাত দিয়ে সালাম করতেন। দূরে বসলে তাকে কাছে টেনে বসাতেন শেখ হাসিনা। সেই মানুষটা কি করে রাজাকার হলো, তা আমি জানতে চাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমি এর বিচার চাই।
বরগুনা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার আবদুল মোতালেব মৃধা বলেন, মারা যাওয়ার এতো বছর পর আবার ষড়যন্ত্রের শিকার হলেন মজিবুল হক নয়া ভাই। তিনি কখনও রাজাকার ছিলেন না। ছিলেন বঙ্গবন্ধুর সহপাঠী ও বন্ধু। ছিলেন স্বাধীনতার সংগঠক।
 বিষয়ে বরগুনার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন,মজিবুল হক নয়া ভাই রাজাকার ছিলেন না। রাজাকারের তালিকায় কিভাবে উনার নাম এল বিষয়টি তদন্ত করে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

Monday, December 9, 2019

অটোম্যান থেকে বর্তমনা ক্যারিশমাটিক এরদোগান pdf download

 রজব তাইয়্যেব এরদোগান !   দুই বারের প্রধানমন্ত্রী।  এখন দ্বিতীয় মেয়াদে তিনি তুর্কির নন্দিত প্রেসিডেন্ট।
  দেশ,মুসলিম উম্মাহ, বিলাদুল হারামাইন, আল-আকসা ও ফিলিস্তিনকেন্দ্রিক তার কথা ও বলা,  ভাষণ ও  বক্তৃতা দেশ-বিদেশে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
নব্যক্রুসেডারেরা একদিকে  হত্যা যজ্ঞে মেতে উঠেছে, অপরদিকে এরদোগান প্রতিবাদী কণ্ঠে আবির্ভূত হচ্ছেন প্রতিবাদের ডায়াসে।
 এরদোগান বর্তমান মুসলিম বিশ্বের এক স্বপ্নপুরুষ।  মজলুমের দরদী বন্ধু। নির্যাতিত জনপদের কল্যাণকামী মুহাফিজ।  নির্যাতিত,নিগৃহীত, কান্নারত শিশুকিশোর-নারীর দায়িত্বশীল অভিভাবক
 তিনি শিকড়ের শিকরে ফিরতে লালায়িত।
 আরবে আজমে তাকে নিয়ে লেখক সাংবাদিকেরা কথা বলছেন, লিখে যাচ্ছেন । কবিরাও বসে নেই। গবেষকরা রাত দিন গবেষণা করছেন তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা নিয়ে । অনেক লেখাই তো হয়েছে,হচ্ছে। আরো হয়তো হবে,  হবেই।  কিন্তু শিকড়সন্ধানী লেখক, গবেষক, ইতিহাসবেত্তা  ডঃ রাগিব সারজানির কলমে তিনি একটু অন্যরকমভাবে চিত্রিত হয়েছেন!
 এই বই নিয়ে পড়তে বসলে মনে হবে-
আমি কী পড়ছি!  কার লেখা পড়ছি !?
যাকে নিয়ে লেখা এই বই, তিনি কোন যুগের মহান শাসক? কী প্রাজ্ঞ রাজনীতিক!
 তিনি দূর অতীতের  কেউ নন তো ! নইলে এই ঝড়ের ভিতর কে আর হবেন এমন সিপাহসালার?  উম্মার হাসিতে যিনি হাসেন? আর কান্নায় কেঁদে কেঁদে হন- সারা!
 আসলে কে তিনি?
আর কালক্ষেপণ না করে এই বই পড়ার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি আপনাকে।
..
ইয়াহইয়া ইউসুফ নদভী

Wednesday, November 6, 2019

Shahih Al-Bukhari very old edition


Sahih Al-Bukhari Al-Shareef - The Sultan Edition


The Sultan edition was originaly commissioned and printed in 1313 AH / 1895 CE in Egypt in nine volumes.

A group of sixteen erudite scholars from Egypt - led by the Grand Shaykh of al-Azhar, Shaykh Hassunah al-Nawawi - were tasked with reviewing it; and later Shaykh al-Islam, the highest religious authority in the Muslim World, approved it, alongside another committee of the most learned scholars in the Ottoman Caliphate.

What made this edition unique was the fact that it was printed according to the famous Yunini manuscript – the most authoritative and elegant handwritten manuscript of Sahih al-Bukhari.

Thus, making the Sultania edition a piece of antiquity, with several generations of scholars growing up hearing about it, but never seeing it.

This new edition is based on a rare and flawless copy housed in the library of Shaykh Muhammad al-Yaqoubi - to which the noble Shaykh generously granted access to during the reproduction of this facsimile.

Pdf download link
مجلد 2
الإمام الحافظ أبي عبدالله محمد بن إسماعيل البخاري الجعفي
نبذة عن الكتاب :
هذه هي الطبعة السلطانية لصحيح البخاري، وهي أصح وأنفس طبعات البخاري، وهي نادرة للغاية، وإذا وجدت مصوراتها فهي باهظة الثمن، والنسخة مصدرة بمقدمة العلامة أحمد شاكر.
التحميل مباشر 
الواجهة
مقدمة
مجلد 1
مجلد 2
مجلد 3
مجلد 4
مجلد 5
مجلد 6
مجلد 7
مجلد 8
مجلد 9

Thursday, June 27, 2019

ফাজিল ( অনার্স) ১ম বর্ষ, ২য় বর্ষ,৩য় বর্ষ ও ৪র্থ বর্ষ পরীক্ষা- ২০১৯ ফরম পূরন সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি


         
দীর্ঘ প্রতীক্ষা শেষে ২০১৩ সালে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ কর্তৃক ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১৩ বিল আকারে জাতীয় সংসদে উত্থাপিত হয়। অত:পর ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৩ খ্রি. তারিখ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতীয় সংসদ এ বিল পাস করে। এভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়। এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশের মাদরাসা শিক্ষক-শিক্ষার্থী, আলিম, পীর-মাশায়িখ ও দেশের জনগণের দীর্ঘ দিনের দাবী পূরণ হল।


         
নোটিশ পিডিএফ ডাউনলোড লিংক

Wednesday, June 26, 2019

আমাদের ভাষা সমস্যা


মাতৃভাষা ব্যতীত আর কোন্ ভাষা কানের ভিতর দিয়া মরমে পশিয়া পরান আকুল করে? মাতৃভাষা ব্যতীত আর কোন্ ভাষার ধ্বনির জন্য প্রবাসীর কান পিয়াসী থাকে? মাতৃভাষা ব্যতীত আর কোন্ ভাষার কল্পনা-সুন্দরী তাহার মন-মজান ভাবের ছবি আঁকে? কাহার হূদয় এত পাষাণ যে মাতৃভাষার অনুরাগ তাহাতে জাগে না? পৃথিবীর ইতিহাস আলোচনা করিয়া দেখ মাতৃভাষার উন্নতি ব্যতীত কোনও জাতি কখনও কি বড় হইতে পারিয়াছে? আরব পারস্যকে জয় করিয়াছিল। পারস্য আরবের ধর্মের নিকট মাথা নীচু করিয়াছিল, কিন্তু আরবের ভাষা লয় নাই, শুধু লইয়াছিল তাহার ধর্মভাব আর কতকগুলি শব্দ। তাই আনোয়ারী, ফেরদৌসী, সাদী, হাফিজ, নিযামী, জামী, সানাই, রুমী প্রমুখ কবি ও সাধক-বুলবুল কুলের কলতানে আজ ইরানের কুঞ্জকানন মুখরিত। যেদিন ওয়াইক্লিফ লাটিন ছাড়িয়া ইংরেজি ভাষায় বাইবেলের অনুবাদ করিলেন, সেই দিন ইংরেজের ভাগ্যলক্ষ্মী সুপ্রসন্ন হইল। যতদিন পর্যন্ত জার্মানিতে জার্মান ভাষা অসভ্য ভাষা বলিয়া পরিগণিত ছিল, ততদিন পর্যন্ত জার্মানির জাতীয় জীবনের বিকাশ হয় নাই। (অংশ)
সূত্র : প্রবন্ধ সংগ্রহ (১৯৭৮)/ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

বাংলা সাহিত্যের যুগ বিভাগ

অনেক পণ্ডিত অনেকভাবে বাংলা সাহিত্যের যুগ বিভাগ করেছেন। ভাষা তাত্ত্বিক পর্যালোচনা করে বাংলা সাহিত্যের সৃষ্টি ও ক্রম বিকাশকে তিনটি বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
প্রাচীন যুগঃ প্রাচীন যুগের ব্যাপ্তিকাল ৬৫০-১২০০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত। এ সময়ের এক মাত্র সাহিত্য নিদর্শন ‘চর্যাপদ’। যাতে বৌদ্ধ সাধকগণ তাদের সাধন পদ্ধতি গানের আকারে লিপিবদ্ধ করেছেন। এছাড়া পাওয়া যায় রূপকথা, ডাক ও খনার বচন। যাতে মানব জীবনের অনেক দিকের কথা ছন্দের আকারে বলা হয়েছে।
মধ্যযুগঃ ১২০৪ খ্রিষ্টাব্দে ইখতিয়ারউদ্দিন মুহম্মদ বিন বখতিয়ার খলজীর বঙ্গ বিজয়কে মনে রেখে মধ্যযুগের ব্যাপ্তিকাল ধরা হয় ১২০০-১৮০০ সাল পর্যন্ত। ১২০০-১৩৫০ সালের মধ্যে বিশেষ কোণ সাহিত্য কর্মের সৃষ্টি না হওয়ায় এ সময়কে অনেক গবেষক বাংলা সাহিত্যের অন্ধকার যুগ বলতে চান। ছয়শত বছরের এ দীর্ঘ সময়ে মধ্যযুগে অনেক সাহিত্য কর্মের সৃষ্টি হয়। মধ্যযুগের প্রথম নির্দশন বড়ু চণ্ডীদাসের ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্য। এটি চৌদ্দ শতকের দ্বিতায়ার্ধে রচিত। এছাড়াও অন্যান্য সাহিত্য কর্মের মধ্যে আছে বেষ্ণব পদাবলি, মঙ্গল কাব্য, রোমান্টিক প্রণয়োপাখ্যান ইত্যাদি।

নজরুল: লড়াইয়ের কবি–ভালোবাসার কবি – সুজয় কর্মকার


নজরুল কাব্যের আসল কথা হল লড়াই, বিদ্রোহ। দ্বিতীয় হল ভালোবাসা। বিংশ শতাব্দীর তরুণদের মধ্যে তিনিই হচ্ছেন প্রথম কবি, বরীন্দ্রনাথের যশোমন্ডলের মধ্যে থেকেও যিনি খুজে পেয়েছেন স্বকীয় রচনাভঙ্গী এবং দৃষ্টিভঙ্গী।
ধূমকেতুর মতই তাঁর আবির্ভাব। সাহিত্য সঙ্গীতের ক্ষেত্রে তিনি যেন কলবোশেখীর ঝড়। প্রথম মহাযুদ্ধে নজরুল ইউনিফর্ম পরে সৈনিকের ব্রত গ্রহণ করেছিলেন পরে ইউনিফর্ম খুলে ফেললেও সৈনিকের ব্রত নিয়েই সাহিত্য ক্ষেত্রে প্রবেশ করছিলেন। তিনি ছিলেন ঝর্ণার মত উচ্ছ্বল, দামিনীর মত চঞ্চল। তারুন্য ও প্রাণপ্রাচুর্যে ভরপুর এক আবেগ। আত্মশক্তিতে বলীয়ান-
“আমি সহসা আমারে চিনেছি,আমার খুলিয়া গিয়াছে সব বাঁধ।”
কবির ‘বিদ্রোহী’ কবিতাটি প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে কবিতার ভাব, ভাষা ও নৃত্য-পাগল ছন্দে আলোড়িত হল বাঙালীর হৃদয়। বিদ্রোহী’র ‘আমি’ শুধুমাত্র লেখক নন- যিনি পড়ছেন অর্থাৎ প্রত্যেক পাঠক। এই দৃষ্টিভঙ্গী এই জীবন-দর্শন, মানবমাত্রের এই বিদ্রোহী মূর্তি আগে বাংলা কাব্যে আত্মপ্রকাশ করেনি। বিদ্রোহের এই দৃশ্যময়, ধ্বনিময় ও আবেগময় প্রকাশের কারণেই বাংলা সাহিত্যে নজরুল “বিদ্রোহী” কবি –সেইসঙ্গে যুগ-প্রবর্তক কবি।
তাঁর বিদ্রোহ কেবল দেশের রক্ত শোষক জাতির বিরুদ্ধে নয়, তাঁর বিদ্রোহ হচ্ছে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, অসত্য ও অসুন্দরের বিরুদ্ধে, ছুঁৎমার্গী সমাজপতিদের বিরুদ্ধে, ধর্মীয় ভন্ডামীর বিরুদ্ধে -এক কথায় সকল শ্রেনীর অনাচারী দুষ্কৃতকারীদের বিরদ্ধে। তাই গদ্যে পদ্যে তাঁর হাতে বেজে উঠল ‘অগ্নিবীণা’।
নজরুলের বিদ্রোহী সত্তা বাঙ্গালীর চেতনায় এনেছিল জোয়ার। শুনিয়েছিল শিকল ভাঙার গান। ‘অগ্নিবীণা’, ‘বিষের বাঁশী’ ‘,ভাঙার গান’, সাম্যবাদী’, ‘সর্বহারা’, ‘ফণিমনসা’, ‘প্রলয়শিখা’, ‘সন্ধ্যা’ ও ‘সওগাত’-প্রভৃতি কাব্য-গ্রন্থে তাঁর বিপ্লব-নিষ্ঠা মূর্ত হয়ে আছে। চাই অভিযান, চাই রদবদল, চাই বাধা-বিঘ্নের সাথে বিরোধ, চাই বর্তমানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ। চাই মরণ -দোল, চাই ঝড়ের সঙ্গে লড়াই- এক কথায় মানুষকে জাগানোই হল নজরুলের বিপ্লব-নিষ্ঠার মূল কথা।
রাজরোষ তাঁকে ক্ষমা করেনি। তাঁর স্থান হয় বন্দীশালায়। অগ্নিবীনা’ ছাড়াও কবির পাঁচটি বই, ‘বিষের বাঁশী’, ‘ভাঙার গান’, চন্দ্রবিন্দু’, ‘ প্রলয় শিখা’ সরকার কর্তৃক বাজেয়াপ্ত ও নিষিদ্ধ হয়। তবুও তাঁকে দমানো যায় নি। তাঁর কবিতার শরীর জুড়েছিল যৌবনধর্মী আবেগ এবং জীবনের নিষ্ঠুর অভিজ্ঞতা। তিনি ছিলেন ন্যায় ও সত্যের সাধক-এককথায় উৎপীড়িতের কবি। তাই কবির সোচ্চার ঘোষণা –
“আমি সেই দিন হব শান্ত
যবে উৎপীড়িতেন ক্রন্দনরোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না–
অত্যাচারীর খড়্গকৃপান ভীম রণভূমে রণিবে না..
বিদ্রোহী রণ-ক্লান্ত
আমি সেই দিন হব শান্ত।”
কিংবা-
“মম এক হাতে বাঁকা বাঁশের বাঁশরী, আর হাতে রণ-তূর্য”.।
শুধু সাহিত্যে নয় নজরুল ছিলেন স্বভাবেও বিদ্রোহী। তাঁর এই বিদ্রোহী চেতনার মুলে ছিল মানবপ্রেম ও মানব -নিষ্ঠা। নজরুলের কল্পনায় ভগবানের চেয়ে মানুষ বড়। মানবিকতাই তাঁর ধর্ম। নজরুলের কাব্যে তাই মানুষেরই জয়গান। শোনা গেছে সাম্যবাদের সুর। তবে এ সাম্যবাদে সোসালিজম-কম্যুনিজমের চেয়ে বড় হয়ে উঠেছে মানুষের কথা–
“গাহি সাম্যের গান
মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান।”
****************
“তুমি আমায় ভালোবাস, তাইতো আমি কবি…”
আমার এ রূপ-সে যে তোমার ভালোবাসার ছবি।।”
অগ্নিতাপস এই বিদ্রোহী কবির জীবনেও ফুটেছিল ভালোবাসার অনেক ফুল। প্রেম -প্রীতি রাগ-অনুরাগ আর সুখ-দুঃখের বিচিত্র ধারায় বয়ে গেছে তাঁর জীবন। ‘বুলবুল’, ‘ছায়ানট’ আর ‘দোলন চাঁপা’ এই তিনটি বইয়ের অনেক কিছুই ভালোবাসাবাসির খেলা। এই কবি খোলাখুলি ভালোবাসার গান লিখেছেন আর গেয়েছেন। ভালোবাসার সাহিত্যে নজরুলের স্থান খুব উুঁচুতে।
নজরুলের প্রেমের কবিতাও সোজাসুজি বস্তু নিষ্ঠ। হৃদয়শীল সত্যনিষ্ঠা এর প্রান। রূপ- -রস-গন্ধ-স্পর্শ- শব্দ কোন কিছুর অভাব নেই।
“আমার দ্বারের কাছটিতে তার
ফুটতো লালী গালের টোলে,
টলতো চরণ, চাউনি বিবশ
কাঁপতো নয়ন পাতার কোলে।”
লড়াইয়ের বীর প্রেমের বীর হতে পারে না। তাকে ভালোবাসার জগতে হারতেই হয়। ভালোবাসায় মানুষ হারে, হেরে ছটফট করে-
“হে মোর রাণী! তোমার কাছে হার মানি আজ শেষে!
আমার বিজয় কেতন লুটায় তোমার চরণতলে এসে।…”
হৃদয়ের জগতে নেই হাম-বড়ামি। চাই এখানে নম্রতা, আমিত্বের ধ্বংস সাধন–
” আমায় দেখে কখন তুমি ফেললে চোখের জল,
(আজ) বিশ্বজয়ীর বিপুল দেউল তাইতে টলমল।”
ভালোবাসা কবিকে যেমন ‘সৃষ্টিসুখের উল্লাসে’মাতিয়ে রেখেছিল তেমনি ভালোবাসাই আবার তাঁর মনকে করেছিল ব্যথাতুর। হৃদয়কে করেছিল ক্ষতবিক্ষত,রক্তাক্ত। ব্যথার বিষে তিনি হয়েছিলেন’নীলকণ্ঠ কবি। প্রেমের যত ভাবাবেগ,ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া,ঈর্ষা,অবহেলা বিস্মৃতি -সবকিছু কবি উপলব্ধি করেছেন। সেইসব আঘাত প্রত্যাঘাত কবি ভাষায়, ছন্দে ফুটিয়ে তুলেছেন। সকরুণ বেদনায় কবি বলেন-

“করেছিলাম চাউনি চয়ন নয়ন হতে মোর,
ভেবেছিলাম গাঁথব মালা -পাইনি খুজে ডোর…”
পরবর্তী জীবনে অন্য সার্থক প্রেম ধরা দিলেও কবির প্রথম প্রেমের নায়িকা অধরা..
“তুমি মোরে ভুলিয়াছ, তাই সত্য হোক
নিশি শেষে নিভে গেছে দীপালি-আলোক”।
অধরা মানসীর জন্য হাহাকার শোনা গেছে তাঁর কবিতায়-
“দূরের প্রিয়া! পাইনি তোমায় তাই এ কাঁদন রোল।
কূল মেলেনা তাই দরিয়ায় উঠতেছে ঢেউ দোল! ”
কবি ভুলতে পারেন না সেই কিশোরী কন্যাকে। তাই বিষাদ-ক্লিষ্ট হৃদয়ে গেয়ে ওঠেন-
“রহি রহি কেন সেই মুখ পড়ে মনে…”
নজরুল সুরের কবি। নজরুল গানের কবি। নজরুল গায়ক কবি। বাঙালীকে গজল শুনিয়ে নজরুল নামজাদা। সুর ছন্দ ও কথার মাধ্যমে নজরুল পৌছে গেছেন জনগণ হদয়ে-সেখানে চিরকাল তাঁর স্থিতি।
“বাগিচায় বুলবুলি তইু ফুলশাখাতে দিসনে আজি দোল”, ” চেও না সুনয়না আর চেও না , এ নয়ন পানে”, “এত জল ও কাজল চোখে, পাষানী আনলে বল কে?”-তাঁর গজলের প্রেমের দুলকি চালে বাঙালী হল মাতোয়ারা!
তারপর?
তারপর সব গান থেমে গেল। গানের পাখি নীরব হল। কণ্ঠ রুদ্ধ হল কবির। স্মৃতি থেকে হারিয়ে গেল জন্মভূমি চুরুলিয়া, তাঁর শৈশব, কৈশোর, চায়ের দোকানের কাজ, লেটোর দলে গান করা গান লেখা, শিয়ারশোল স্কুলের স্মৃতি, বন্ধু শৈলজানন্দের সাথে কৈশোরের সেই উত্তাল দিনগুলি, পরিক্ষা না দিয়েই পালিয়ে গিয়ে বাঙালী পল্টনে যোগদান। ভুলে গেলেন গোমতীর তীরে ফেলে আসা সেই কিশোরী কন্যার কথা,ভুলে গেলেন আত্মীয় -পরিজন -সংসার। ভুলে গেলেন চিরসঙ্গী দুলীকে -সে কাছে থেকেও অনেক দুরে। বিস্মরণের অতলে তলিয়ে গেল বন্ধুবান্ধব, অসংখ্য অনুরাগী-অনুরাগিনীর। রইল শুধু সম্বিৎহারা কবির শূন্য, উদাস বোবা দৃষ্টি।
“চিরদিন কাহারো সমান নাহি যায়…”
নিজের লেখা গানের কথা এভাবে যে নির্মম সত্য হয়ে দেখা দিল কবির জীবনে – তা কে ভেবেছিল! কবি যেমন প্রচুর আয় করেছেন তেমনি বে হিসাবী খরচও করেছেন। শেষের দিকে দারিদ্রের চরম লাঞ্ছনায় মাত্র চার হাজার টাকার জন্য তাঁকে তাঁর গানের রয়ালটি সহ সমস্ত রচনার স্বত্ব বন্ধক দিতে হয়। তার উপর প্রিয় পত্নীর অসুস্থতা কবিকে দিশেহারা করে দেয়। ১৯৪২ সালের ৯ই জুলাই কলকাতা বেতার কেন্দ্রের এক গল্পপাাঠের অনুষ্ঠানে পাঠ শেষ করার আগেই জিহ্বা আড়ষ্ট হয়ে কবির কণ্ঠ রুদ্ধ হয়ে আসে এবং তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।
তারপর সে এক যন্ত্রনার, করুণ বেদনার ইতিহাস। কান্না পাওয়ার ইতিহাস। অনেক চেষ্টা হল। দেশে বিদেশে তাঁর চিকিৎসা হল। কিন্তু ব্যর্থ হল সব প্রচেষ্টা। প্রায় তিন যুগ ঐরকম অবস্থায় থাকার পর ১৯৭৬ সালের ২৯শে আগষ্ট ঢাকায় সংসারের সমস্ত কোলাহল থেকে দুরে… অনেক দুরে… ঘুমের রাজ্যে নীরব কবি শ্রান্ত হয়ে চিরঘুমে ঘুমিয়ে পড়লেন।

Tuesday, June 25, 2019

Al Atraf الأطراف

Atraf (الأطراف ) means the beginning part of a hadith by means of which the rest of the hadith may be known.This is a way of compilation of hadith where along with the description of the beginning part of a hadith, either all the available chains of narration (asanid) are mentioned generally or such chains are mentioned with reference to particular books.

يعني الجزء الأول من الحديث الذي يمكن من خلاله معرفة بقية الحديث. هذه طريقة لتجميع الأحاديث حيث جنبا إلى جنب مع وصف الجزء الأول من الحديث ، إما كل سلاسل السرد المتاحة (asanid) مذكورة بشكل عام أو يتم ذكر هذه السلاسل بالرجوع إلى كتب معينة.

علق ما یلی

                             الحديث المقلوبعدلCrystal Clear app kdict.pngوي شيئا آخر، بأن يبدل راويا بآخر وقد يكون القلب إما في المتن وإما في السند، وقلب السند نوعان:

  1. أن يكون الحديث مشهورا.
  2. أن يكون القلب بتقديم أو تأخير لرجال الإسناد (كأن يكون الراوي منسوبا لأبيه)، وحكم الحديث المقلوب: أنه يجب أن 
نرده إلى ما كان عليه وهو الأصل الثابت للعمل به.

     الحديث المرفوع

هو ما أضيف إلى رسول الله خاصة، سواء كان الذي أضافه هو الصحابي أو تابعين أو من بعدهما سواء كان ما أضافه قولا أو فعلا أو تقريرا أو صفة أو تصريحا، والحديث المرفوع نوعان:
  1. الرفع الصحيح:وذلك بإضافة الحديث إلى النبي قولا أو فعلا أو تقريرا أو صفة، مثل: ((قال رسول الله : من حسن إسلام المرء تركه مالا يعنيه.))
  2. الرفع الحكمي ويكون بمثل قول الصحابي: (أمرنا) أو (نهينا) أو (من السنة كذا).....الخ.

الحديث النازل

هو ما قابل الحديث العالي بأقسامه السابقة والإسناد النازل مفصولا إلا أن تميز بفائدة كزيادة الثقة في رجاله على العالي وكونهم ((أي الثقات)) أحفظ أو أفقه أو نحو ذلك قال ابن مبارك: " .. ليس جودة الحديث قرب بل جودته صحة الرجال ".

الحديث المتروك

هو ما يرويه متهم بالكذب ولا يعرف إلا من جهته ويكون مخالفا للقواعد المعلومة أو يكون قد عرف بالكذب في غير حديث أو عرف بكثرة الغلط أو الفسق أو الغفلة، حكم المتروك: أنه ساقط الاعتبار لشدة ضعفه فلا يحتج به ولا يستشهد به


الأطراف
الأطراف : الأطراف جمع طرف ، وطرف الحديث ، الجزء الدال على الحديث ، أو العبارة الدالة عليه ، مثل : حديث الأعمال بالنيات ، وحديث الخازن الأمين ، وحديث سؤال جبريل .

Friday, June 21, 2019

দাওরা হাদীসের সমস্ত কিতাবের শরাহ pdf


নামঃ সহজ ইন আমুলবারী (শরহে বুখারী মাগাযী ও তাফসীর)
বিষয়ঃ হাদিস
লেখক / অনুবাদকঃ মাওলানা মুহাম্মাদ আলমগীর হুসাইন
প্রকাশনীঃ মাকতাবায়ে এমদাদিয়া-ঢাকা
সাইজঃ ১২.১ এমবি
ডাউনলোড

নামঃ নাসরুল বারী শরহে সহীহ্‌ বুখারী ১ম খণ্ড 
বিষয়ঃ হাদীছ 
লেখক / অনুবাদকঃ মাওলানা নো’মান আহমদ
প্রকাশনীঃ আনোয়ার লাইব্রেরী 
সাইজঃ ৩৯ এমবি 

ডাউনলোড

নামঃ নাসরুল বারী শরহে সহীহ্‌ বুখারী ২ম খণ্ড 
বিষয়ঃ হাদীছ 
লেখক / অনুবাদকঃ মাওলানা মাকসুদ আহমাদ 
প্রকাশনীঃ মাহমুদিয়া লাইব্রেরী 
সাইজঃ ২৪.৩ এমবি 

ডাউনলোড


নাম: নাসরুল বারী শরহে সহীহ্‌ বুখারী ৩য় খণ্ড
বিষয়: হাদীস
অনুবাদক: আবু বকর সিদ্দিক
প্রকাশনী: আনোয়ার লাইব্রেরী
সাইজ: ২৪ এমবি
ডাউনলোড

০২/১২/২০১৭
নাম: নাসরুল বারী শরহে সহীহ্‌ বুখারী ৫য় খণ্ড
বিষয়: হাদীস
অনুবাদক: আবু বকর সিদ্দিক
প্রকাশনী: আনোয়ার লাইব্রেরী
সাইজ: ২৭ এমবি
ডাউনলোড

Saturday, February 16, 2019

কবির শ্রদ্ধা বাংলা একাডেমিতে, শহীদ মিনারে অনুমতি মেলেনি


কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নয়, সদ্যপ্রয়াত কবি আল মাহমুদের মরদেহ বাংলা একাডেমিতে নেওয়া হচ্ছে। সেখানে সকাল ১১টা ৪৫ মিনিট থেকে রাখা হবে কবির লাশ। এরপর ভক্তদের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে দুপুর সোয়া ১২টায় নেওয়া হবে জাতীয় প্রেস ক্লাবে। কবির সহকারী আবিদ আজম এসব তথ্য জানান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলা একাডেমির জনসংযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ বিভাগের পরিচালক অপরেশ কুমার ব্যানার্জীও। তিনি বলেন, কবির স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে একাডেমির নজরুল মঞ্চে রাখা হবে কবির মরদেহ।
এছাড়া পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী প্রথম জানাযা বাদ জোহর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর ফটকে অনুষ্ঠিত হবে।দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে কবির সহকারী আবিদ বলেন, কবির মরদেহ শহীদ মিনারে নেওয়ার জন্য আমাদের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছিল। তবে অনুমোদন পাওয়া যায়নি।
শুক্রবার রাত ১১টা ০৫ মিনিটে ধানমণ্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন কবি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। তিনি নিউমোনিয়াসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। এর আগে গত ৯ ফেব্রুয়ারি রাতে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় কবিকে ইবনে সিনা হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। ওই দিন প্রথমে সিসিইউতে ও পরে আইসিইউতে নেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার তাকে ‘লাইফ সাপোর্ট’ দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, কবি আল মাহমুদ আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি। তিনি একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, ছোটগল্প লেখক, শিশুসাহিত্যিক এবং সাংবাদিক। বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়াংশে সক্রিয় থেকে তিনি আধুনিক বাংলা কবিতাকে নতুন আঙ্গিকে, চেতনায় ও বাক্‌ভঙ্গীতে বিশেষভাবে সমৃদ্ধ করেছেন

Wednesday, February 13, 2019

কাদিয়ানীদের কাফের ঘোষনার দাবীতে উত্তাল বাইতুল মোকাররাম।


মানবতার মুক্তির দূত মহানবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে শেষ নবী হিসেবে অস্বীকারকারী কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের ঘোষিত কথিত জাতীয় ইজতেমা বন্ধের দাবিতে সারােদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচী পালিত হচ্ছে ঢাকা বায়তুল মোকাররামের উত্তর গেইটে। 

গত (১০ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে পঞ্চগড় জেলায় আগামী ২২,২৩,২৪ ফেব্রুয়ারি জাতীয় ইজতেমা নামক দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের ঈমান আকীদা বিধ্বংসী অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রতিবাদ ও অনতিবিলম্বে তা বন্ধের দাবিতে আর্ন্তজাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে আমরা আগামী শুক্রবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দেশব্যাপী এ বিক্ষোভ পালন করা হবে বলে ঘোষণা দিয়ে ছিলাম। কিন্তু বিশ্ব ইজতেমার কারণে এ কর্মসূচীর তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে।

Saturday, February 9, 2019

পবিত্র কুরআনের প্রথম বাংলা অনুবাদ করেন কে?


পবিত্র কুরআনের প্রথম বাংলা অনুবাদ করেন কে? এমন প্রশ্নে অবাক হতে পারেন অনেকেই। এর কারণ হচ্ছে সকলেই জানেন যে, বাবু গিরিশচন্দ্র সেন কুরআনের প্রথম বাংলায় অনুবাদ করেছেন। এ তথ্য অনেক বই-পুস্তকে পাওয়া যায়। অনেকে বিভিন্ন সভাসমাবেশ, সেমিনারেও এতথ্য পরিবেশন করে বিভ্রান্তি ছড়ান। এমনকি পাঠ্যপুস্তকেও দুঃখজনকভাবে এতথ্য পাওয়া যায়। শুধু কি তাই? সরকারি প্রতিষ্ঠান ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে প্রকাশিত গিরিশচন্দ্র সেনের জীবনী বিষয়ক পুস্তিকাতেও তাঁকে কুরআন শরীফের প্রথম বাংলা অনুবাদক বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু প্রকৃত সত্য এটা নয়।
সর্বপ্রথম বাংলা ভাষায় কুরআন আংশিক অনুবাদ করেন মাওলানা আমীরুদ্দীন বসুনিয়া ১৮০৮ সালে। এরপর বাংলা ভাষায় কুরআন পূর্ণাঙ্গ অনুবাদ করেন মৌলভী নঈমুদ্দীন ১৮৩৬ সালে। গিরিশচন্দ্র সেন শুধু উক্ত অনুবাদ পুস্তক আকারে সন্নিবেশ করেন। তাই গিরিশচন্দ্র সেন হচ্ছেন প্রকাশক মাত্র। তাও ৫০ বছরপর ১৮৮৬ সালে। সুতরাং কুরআন শরীফের প্রথম বাংলা অনুবাদক গিরিশচন্দ্র সেন নন। বরং মৌলভী নঈমুদ্দীনই পূর্ণাঙ্গ কুরআনের প্রথম বাংলা অনুবাদক। আর মাওলানা আমীরুদ্দীন বসুনিয়া হলেন বাংলভাষায় প্রথম কুরআনের আংশিক অনুবাদক।
উল্লেখ্য, গিরিশচন্দ্র সেনের জন্ম ১৮৩৫ এবং মৃত্যু ১৯১০ সালে। গিরিশচন্দ্রের জন্মেরও আগে অর্থাৎ ১৮০৮ সালে কুরআন বাংলায় অনুবাদের কাজ শুরু করেন মাওলানা আমীর উদ্দীন বসুনিয়া। এরপর গিরিশচন্দ্র সেনের জন্মের এক বছর পরই অর্থাৎ ১৮৩৬ সনে মৌলভী নঈমুদ্দীন পূর্ণাঙ্গ কুরআনের বাংলা অনুবাদ সম্পন্ন করেন। মৌলভী নাঈমউদ্দীন সম্পর্কে তাঁর ছেলে মৌলভী রোকনউদ্দীন আহমদ তাঁদের কুরসিনামা থেকে যেসব তথ্য পরিবেশন করেছেন তাতে দেখা যায়: তাঁদের পূর্বপুরুষ শাহ সৈয়দ মুহাম্মদ খালেদ বাগদাদ থেকে মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের আমন্ত্রণে দিল্লী আসেন। তাঁর অধঃস্তন পঞ্চমপুরুষ সৈয়দ মুহাম্মদ তাহের দিল্লী থেকে শিক্ষকতার উদ্দেশ্যে ঢাকায় আসেন। এরপর বিবাহ সম্পন্ন হয় এবং মানিকগঞ্জের গালা গ্রামে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর বংশধররা ‘সৈয়দ’ উপাধি পরিত্যাগ করেন এবং গালা গ্রাম থেকে টাঙ্গাইলের করটিয়ার কাছে সুরুজ গ্রামে এসে বসবাস শুরু করেন। মৌলভী মুহাম্মদ নঈমউদ্দীন সুরুজ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা সলিমউদ্দীন এবং মাতা তাহেরা বানু।
পিতার কাছ থেকে আরবি, ফারসি ও উর্দু ভাষা শিক্ষা লাভের পর উচ্চশিক্ষার জন্য নঈমউদ্দীন ঢাকা চলে আসেন এবং আট বছর কাল এক বিশিষ্ট আলেমের তত্ত্বাবধানে থেকে আরবি, ফারসি ও উর্দু ভাষায় এবং হাদিস, তাফসির, ফিকাহ ও মান্তেক প্রভৃতি শাস্ত্রে গভীর জ্ঞান অর্জন করেন। এরপর তিনি বিহার, এলাহাবাদ, মুর্শিদাবাদ, জৌনপুর, আগ্রা, দিল্লি প্রভৃতি স্থানে অবস্থান করেন। এসব স্থানের খ্যাতনামা আলেমদের কাছ থেকে অগাধ দীনিইলম আয়ত্ত করেন। তিনি তাঁর সর্বশেষ উস্তাদের কাছ থেকে আলিম-উদ-দহর বা জ্ঞানসমুদ্র উপাধি লাভ করে ৪১ বছর বয়সে টাঙ্গাইলে ফিরে আসেন। সত্যিকার অর্থেই তিনি ছিলেন  জ্ঞানসুমদ্র। সেসময় হিন্দুসমাজে যেমন ছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, মুসলিম সমাজে তেমনই ছিলেন মৌলভী মুহাম্মদ নঈমউদ্দীন।
মৌলভী নঈমউদ্দীনের অর্থসম্পদ ছিল না ঠিক। তবে ছিল জ্ঞান এবং সমাজসেবা করবার মতো তাঁর বিশাল হৃদয়। সেকালের করটিয়ার প্রখ্যাত জমিদার হাফেজ মাহমুদ আলী খান পন্নী তাঁকে সহযোগিতা করবার জন্য এগিয়ে আসেন। করটিয়ায় তিনি স্থাপন করেছিলেন ‘হাফেজ মাহমুদিয়া যন্ত্র’ নামে একটি প্রিন্টিং প্রেস। এ প্রেস তিনি তাঁকে ব্যবহার ও পরিচালনা করতে দিয়েছিলেন। এখান থেকে মৌলভী নঈমউদ্দীন ‘আখবারে এসলামিয়া’ নামে একটি মাসিক পত্রিকা প্রকাশ করেন। এতে ইসলামের বিভিন্ন দিক নিয়ে ফিচার ও মুসলিমজাহানের বিশেষ খবরাদি ছাপা হতো। এর প্রতিসংখ্যার সম্পাদকীয় কলামটি ছিল খুব আকর্ষণীয়। তাঁর সমাজ সংস্কারমূলক কাজগুলো পাঠকসমাজে দারুণ সাড়া জাগায়। ‘আখবারে ইসলামমিয়া’ মুসলিম সম্পাদিত পত্রিকাগুলোর মধ্যে ছিল উল্লেখযোগ্য। তৎকালে কোলকাতা থেকে প্রকাশিত পত্রিকাগুলোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সারাদেশে চলতো এ পত্রিকা।
মীর মশাররফ হোসেন এবং মৌলভী নঈমউদ্দীন ছিলেন সেসময়ের দু’জন বিশাল ব্যক্তিত্ব। চিন্তাচেতনা ও জীবনদর্শনের কারণে পৃথক দু’টি ধারায় সাহিত্য রচনা করেন তাঁরা। বলতে গেলে দু’জন ছিলেন দুই দিগন্তের অধিবাসী। মীর মশাররফ হোসেনের ‘গোজীবন’ নামে ৬৬ পৃষ্ঠার একটি বই প্রকাশিত হলে এর কঠোর সমালোচনা করে নঈমউদ্দীন আখবারে এসলামিয়াতে ফতোয়া প্রকাশ করেন। এতে আখবারে এসলামিয়া সম্পাদক ও মীর মশাররফ হোসেনের মধ্যে কলমযুদ্ধ শুরু হয়। এ যুদ্ধ শুধু টাঙ্গাইল-করটিয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। বাংলা ভারতের বিভিন্ন স্থানে এর প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। তখনকার বিখ্যাত পত্রিকা ‘সুধাকর’ মীর মশাররফ হোসেনকে সমর্থন করেনি। এ বিরোধের কথা উল্লেখ করে মুন্সী মুহাম্মদ রেয়াজুদ্দীন আহমদ বলেন :
‘যখন প্রধান সাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেন ‘গোজীবন’ নামক পুস্তক লিখিয়া মুসলমানদিগের গোমাংস ভক্ষণ ও গো কুরবানির বিরুদ্ধে অন্যায় দোষারোপ করিয়া তীব্র মন্তব্য প্রকাশ করেন এবং তদুত্তরে অন্যতম সাহিত্যিক ও ধর্মগ্রন্থ প্রণেতা আখবারে এসলানিয়ার সম্পাদক মৌলভী নঈমউদ্দীন সাহেব ঐরূপ গ্রন্থলেখক মুসলমানের ওপর কাফেরী ফতোয়া দিয়া আখবারে এসলামিয়াতে তা প্রকাশ করিলে মীর সাহেব মৌলবী সাহেবের নামে আদালতে মানহানির মামলা দায়ের করেন। তখন আমরা সুধাকরে অবশ্যই মৌলভী সাহেবের পক্ষ সমর্থন করিতেছিলাম। কিন্তু প-িত (রেয়াজুদ্দীন আহমদ মাশহাদী) সাহেবও এ বিষয়ে আমাদিগকে বিশেষভাবে উজ্জীবিত করিয়া ধর্মের পবিত্র মর্যাদা রক্ষা করিতে অনুরোধ করিয়াছিলেন। তিনি বিপন্ন মৌলভী সাহেবকে নানাপ্রকার সাহায্য করিতে কুণ্ঠিত ছিলেন না। এ ক্ষেত্রে মীর সাহেবের দিকে তিনি আদৌ দৃকপাত করেন নাই।’
মৌলভী নঈমউদ্দীন মীর মশাররফ হোসেনকে কাফের ফতোয়া দিলে টাঙ্গাইল থেকে মীর মশাররফ হোসেন সাহেবের সম্পাদনায় পাক্ষিক হিতকরীতেও বাদানুবাদ শুরু হয় এবং তা দীর্ঘকাল চলে। তারপর পন্ডিত রেয়াজুদ্দীন আহমদ মাশহাদীর চেষ্টাতে শেষপর্যন্ত উভয় পক্ষের একটা মিটমাট হয়ে যায়। মীর সাহেব ‘গৌজীবন’ পুনঃমুদ্রিত করবেন না বলে আশ্বাস দিলে মৌলভী সাহেব তাঁর তারিফ করেন। আদর্শের দিক থেকে দুই সাহিত্যেকের মধ্যে কলমযুদ্ধ হলেও ব্যক্তিজীবনে তাঁদের মধ্যে আন্তরিকতা ছিল প্রচুর। প্রায়ই তাঁরা একত্র মিলিত হয়ে পারিবারিক সুখ-দুঃখ থেকে মুসলমানদের সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাহিত্য-সংস্কৃতি নিয়ে আলাপ-আলোচনা করতেন।
মৌলভী নঈমউদ্দীনের জীবনের সবচেয়ে বড় কাজ, আল কুরআনের বঙ্গানুবাদ। তাঁর অনুবাদের প্রত্যেকটি আয়াতের অংশসমূহ আলাদা আলাদাভাবে আরবি হরফে মুদ্রিত করে তার নিচে সে অংশের বাংলা তরজমা এবং অপেক্ষাকৃত ছোট অক্ষরে ব্যাখ্যা ও বিস্তৃত তফসির করেছেন। তাঁর অনূদিত কুরআন শরীফ প্রথম খণ্ড ১৮৯১ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত হয়। দ্বিতীয় খণ্ডের প্রথম সংস্করণ ১৮৯২ সালে হাফেজ মাহমুদ আলী খান পন্নী জমিদার সাহেবের সহায়তায় করটিয়ার মাহমুদিয়া প্রেস থেকে ছাপা হয়। এই প্রেস থেকে তৃতীয় খণ্ডও প্রকাশিত হয়। তৃতীয় খণ্ড ছাপা হবার পর তিনি কোলকাতা চলে যান এবং জলপাইগুড়ির জমিদার খানবাহাদুর রহিম বক্স খানের অর্থানুকূল্যে তাঁর অনূদিত কুরআন শরীফের ৭ম, ৮ম ও ৯ম পারা পর্যন্ত প্রকাশ করেন। ১০ম পারা মুদ্রণ শেষ হবার আগেই ১৯০৮ সালে ২৩ নবেম্বর মৌলভী নঈমউদ্দীন ইন্তিকাল করেন। তিনি সর্বমোট তেইশ পারা পর্যন্ত অনুবাদ করেন। অবশিষ্ট অংশ তাঁর পুত্র কাসেমউদ্দীন ও ফখরউদ্দীন আহমদকে অনুবাদ ও প্রকাশ করবার নির্দেশ দিয়ে যান।
মৌলভী নঈমউদ্দীন ফতোয়ায়ে আলমগিরি বাংলায় অনুবাদ করে চার খণ্ডে প্রকাশ করেন। তিনি বুখারী শরীফেরও অনুবাদ করেন।
অন্যান্য রচনাবলী : মৌলভী নঈমউদ্দীন রচিত আরও কিছু পুস্তক রয়েছে। এগুলো হচ্ছে :
১. কালেমাতল কোফর, ২. এছাবাতে আখের জ্জোহর, ৩. এনসাফ, ৪. রফা-এদায়েন, ৫. আদেল্লায়ে হানিফিয়া, ৬. মায়াদানোল ওলুম, ৭. ইউসুফ সুরার সুবিস্তৃর্ণ তফসির, ৮. সেরাতল মস্তাকিম, ৯. সেরাতল মস্তাকিম (নব পর্যায়), ১০. ধর্মের লাঠি, ১১. বেতের, ১২. তারাবিহ।
এগুলো ছাড়াও পুঁথির ভাষায় এবং পুঁথির আদর্শে আরও কয়েকটি জীবনচরিত লিখেছিলেন। এগুলো হচ্ছে : ১. ছহী শাহ আলমের কিচ্ছা, ২. ছহী শের সাহেবের কিচ্ছা, ৩. ছহী আলমগীরের কিচ্ছা, ৪. ছহী নূরজাহান বেগমের কিচ্ছা, ৫. ছহী আলাউদ্দীনের কিচ্ছা, ৬. ছহী হোসেন শাহের কিচ্ছা, ৭. গোকাণ্ড।
মৌলভী নঈমউদ্দীন তাঁর আরদ্ধ কাজ সম্পন্ন করে যেতে না পারলেও মুসলিমসমাজে আল কুরআনের প্রথম বঙ্গানুবাদক হিসাবে অক্ষয় হয়ে আছেন। এই মহাপুরুষের কর্মতৎপরতায় বাংলার অনেক অমুসলিম তখন ইসলাম সম্পর্কে আগ্রহী হয়ে ওঠেন এবং মুসলিমদেরও বহু ভ্রান্ত ধারণা দূর হয়। সেসময় মুসলিমসমাজে তাঁর মতো অসাধারণ জ্ঞানী আলেম এবং বহু গ্রন্থপ্রণেতা ও অনুবাদক আর কেউ ছিলেন না। সুবক্তা হিসেবেও তিনি সারাদেশে খ্যাতি অর্জন করেন। সব তথ্য-উপাত্ত ইন্টারনেটের

মুসলিম উম্মাহ্‌র অধঃপতনে জাতীয়তাবাদের ভূমিকা

"এক জাতি, এক ভূমি"- এই চেতনা ও আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে একদা যে মুসলিম উম্মাহ্‌ পরিণত হয়েছিল বিশ্বের প্রভাবশালী সভ্যতায় সেই একই ...

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ