প্রথমবারের
মতাে চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার সকল কওমি মাদরাসায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয়
সঙ্গীত পাঠ, অ্যাসেম্বলী করাসহ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পাঠের এক নির্দেশনা
পাঠানো হয়েছে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় থেকে।
গত
সােমবার (০৪ নভেম্বর) উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) হাবিবুল হাসান স্বাক্ষরিত এ
সংক্রান্ত একটি সরকারি নির্দেশনামা উপজেলার ৭টি কওমি মাদরাসায় পাঠানাে হয়।
সরকারি
এই নির্দেশনামা পাওয়ার বিষয়ে আওয়ার ইসলামকে সত্যতা নিশ্চিত করেছেন জামিয়া
ইসলামিয়া পটিয়ার সিনিয়র মুহাদ্দিস মাওলানা উবায়দুল্লাহ হামজা।
নির্দেশনামায়
উল্লেখ রয়েছে। ১. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতিদিন (বন্ধ ব্যতীত) জাতীয় পতাকা
উত্তোলনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা। ২) জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
৩.
প্রতিদিন শিক্ষার্থীদের অ্যাসেম্বলির ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং ৪. শ্রেণি কক্ষে
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পড়ানাের ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
নির্দেশনামায়
প্রধানমন্ত্রীর বরাত দিয়ে এসব নির্দেশানাবলি যথাযথ বাস্তবায়ন হচ্ছে কি না, তাও
কার্যালয়কে জানাতে অনুরােধ করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ১৯
সেপ্টেম্বর ‘কওমি মাদ্রাসা সমূহের দাওরায়ে হাদিস (তাকমীল)-এর সনদকে আল হাইআতুল
উলয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ’ এর অধীনে মাস্টার্স ডিগ্রি (ইসলামিক
স্টাডিজ ও আরবি) সমমান প্রদান বিল ২০১৮ জাতীয় সংসদে পাস হয়।
কওমি
মাদরাসার স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য ও স্বকীয়তা বজায় রেখে দারুল উলুম দেওবন্দের
মূলনীতিসমূহকে ভিত্তি ধরেই এ স্বীকৃতির আইন হয়।
নির্দেশনার
বিষয়ে জানতে পটিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাবিবুল হাসান মোবাইলে আওয়ার ইসলামকে
বলেন, আমরা মন্ত্রণালয় সূত্রে আইন অনুযায়ীই এ নির্দেশনা দিয়েছি।
আমাদের কাছে নির্দেশনার স্মারক নাম্বারও রয়েছে।
কওমি
মাদরাসাকে নিজেদের স্বকীয়তা বজায় রেখে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে, তাছাড়া
দেশের আর কোথাও এমন নির্দেশনা দেয়া না হলেও পটিয়াতে কেন এমন নির্দেশনা জানতে চাইলে
তিনি বলেন, অনেকেই হয়তো এখনো বুঝতে পারছে না চিঠি কিভাবে দেবেন। আমরা
দিয়েছি। পর্যাক্রমে হয়তো সবাই এ প্রক্রিয়ায় আসবে।
সরকার
এ নির্দেশনা মাদরাসায় চালু হয়েছে কিনা বা কবে নাগাদ চালু হতে পারে জানতে যোগাযোগ
করা হয় মাদরাসার সিনিয়র মুহাদ্দিস মাওলানা উবায়দুল্লাহ হামজার সঙ্গে।
তিনি
আওয়ার ইসলামকে বলেন, গতকাল আমাদের মাদরাসার এ নির্দেশনা এসেছে। তবে আমাদের
মুহতামিম দেশের বাইরে থাকায় এ বিষয়ে আমরা কোনো উদ্যোগ এখনো নেইনি।
তিনি
বলেন, জাতীয় পতাকা বা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পড়াতে কোনো সমস্যা
নেই। বরং অনেক মাদরাসা চালু আছে। তবে জাতীয় সঙ্গীত ও অ্যাসেম্বলী মাদরাসায় নেই।
এগুলো যদি আইনে পরিণত করা হয় তাহলে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ কমিশনকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্তে
আসা উচিত।
তিনি
বলেন, এটা শুধু পটিয়ার মাদরাসাগুলোর বিষয় না, তাই
বোর্ড বা শীর্ষ উলামায়ে কেরামের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়া প্রয়োজন।